শীতের দিনে ত্বকের যত্ন | শীতের ত্বকের যত্ন

শীতের দিনে ত্বকের যত্ন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই আর্টিকেলে আমরা দুই ভাবে শীতের ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জানব। যেমন শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনাকে দুটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে প্রথমটি হলো শীতের সময় ত্বকের যত্ন এবং দ্বিতীয় টি হল শীতের সময় মুখের যত্ন।

শীতের-দিনে-ত্বকের-যত্ন
সুতরাং শীতের দিনে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনার যে সমস্ত বিষয়গুলো জানা উচিত, এইসব বিষয়গুলো আপনি এই আর্টিকেল এর মধ্যে পেয়ে যাবেন। তাই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ শীতের দিনে ত্বকের যত্ন | শীতের ত্বকের যত্ন

শীতের দিনে ত্বকের যত্ন | শীতের ত্বকের যত্ন

শীতের দিনে ত্বকের যত্ন বা শীতের ত্বকের যত্ন সঠিকভাবে না নিলে ত্বক নষ্ট হয়ে যায়। শীত আসার আগেই আমাদের শরীরের রুক্ষতা বেড়ে যায়, ঠিক তখনই আমরা বুঝতে পারি শীতের আগমন হচ্ছে। আমাদের শরীরে তেলের আস্তরণ ঠিক থাকলে ত্বক ভালো থাকে কিন্তু শীতের সময় যেহেতু এই তেলের আস্তরণ শুষে নেয়। তাই শীতের সময় ত্বক ভালো রাখার জন্য আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ মেনে চলতে হবে। 
শীতের-দিনে-ত্বকের-যত্ন
আবার শীতের সময় ত্বকের বিভিন্ন এলার্জির জনিত সমস্যা যেমন সোরিয়াসিস, ইকথায়োসিস, একজিমা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে আপনার ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য অবশ্যই একজন ভালো ডার্মাটোলজিস্ট এর শরণাপন্ন হতে হবে। এছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রেখে শীতের দিনে ত্বকের যত্ন নিতে হবে।


শীতের আবহাওয়াতে ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ঠান্ডা আবহাওয়া ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষ করে তুলতে পারে। 

এখানে কিছু টিপস দেওয়া হলোঃ

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুনঃ শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, তাই নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। শীতের সময় ময়েশ্চারাইজার গোসলের পরে ব্যবহার করতে পারেন এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে আপনার শরীরের ত্বক ভালো থাকবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজারে উপাদান হিসেবে শিয়া বাটার, অ্যালোভেরা, গ্লিসারিন বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড থাকতে হবে। শিয়া বাটার, অ্যালোভেরা, গ্লিসারিন বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত ময়েশ্চারাইজার শরীরের ত্বকে ভালো কাজ করে। অর্থাৎ ময়শ্চেরাইজার নেওয়ার সময় এই উপাদান গুলো দেখে নিবেন। কিন্তু মনে রাখবেন আর হাতের ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য একটি ভালো মানের হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তবে ময়েশ্চারাইজার দিয়েও আপনি হাতের ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন।

গোসল করুনঃ শীতের দিনে আমরা অনেকেই গোসল করতে চাই না। শীতের দিনে শরীরে এবং চুলে বেশি ময়লা জমে তাই আমাদের শীতের সময় প্রতিদিন গোসল করা উচিত।

গরম পানি এড়িয়ে চলুনঃ গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল দূর করে দেয়, তাই খুব গরম পানি দিয়ে গোসল না করাই ভালো। 

কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুনঃ অনেক গরম পানি এর পরিবর্তে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন, তাহলে শরীরের শুষ্কতা ভাব দূর হবে। কুসুম গরম পানি দিয়ে বেশি সময় গোসল করলে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারিয়ে যায়।

প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করুনঃ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের তেল যেমন নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা বাদামের তেল ব্যবহার করুন কারণ ত্বকে তেল প্রয়োগের ফলে প্রাকৃতিক ভাবে আর্দ্রতা যোগায়। এগুলো ময়েশ্চারাইজারের বিকল্প হিসেবেও আপনি ব্যবহার করতে পারেন।

লোশন ব্যবহার করুনঃ শীতের সময় ত্বকের আর যত নেয়ার অন্যতম একটি প্রোডাক্ট হচ্ছে লোশন। শীতের সময় আমাদের সকলের বাসাতেই লোশন থাকে। লোশন কেনার সময় অবশ্যই আমাদের ভালো ব্র্যান্ডের লোশন কিনে ব্যবহার করা উচিত।

গ্লিসারিন ব্যবহারঃ লোশন এবং তেলের মতোই গ্লিসারিন শীতের সময় ত্বকের যত্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান তাই শীতের সময় তখন ভালো রাখতে অবশ্যই ভালো মানের গ্লিসারিন ব্যবহার করতে হবে।

সানস্ক্রিন ব্যবহার করুনঃ শীতকালে সূর্যের তাপ কম মনে হলেও, UV রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এজন্য শীতের সময় রোদ কম থাকলেও অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ শীতকালে কম পানি পান করার প্রবণতা থাকে, কিন্তু ত্বক হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। তাই ত্বক হাইড্রেট রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।

লিপ বাম ব্যবহার করুনঃ ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে, তাই নিয়মিত লিপ বাম ব্যবহার করুন।

স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুনঃ স্বাস্থ্যকর খাবার প্রত্যেকের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শীতকাল হোক কিংবা গরম কাল হোক সব সময়ই আমাদের স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা উচিত, ত্বক ভালো রাখার জন্য।

পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুনঃ ভিটামিন এ, সি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বাদাম, তাজা সবজি, ফলমূল এবং মাছ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন।

চিনি এবং কফির ব্যবহারঃ আপনার অবশ্যই ত্বকের স্ক্রাবার করার নাম শুনেছেন। ত্বকের স্ক্রাবার করার জন্য যে দুইটি উপাদান প্রয়োজন সে দুটি উপাদান যিনি এবং কফের মধ্যে রয়েছে। তাই আপনারা যদি চিনি এবং কফির হালকা গরম পানি ত্বকে লাগান তাহলে দেখবেন আপনার শরীরের যাবতীয় মরে যাওয়া কোষগুলি দূর হয়ে যাবে।

ফলমূল খেতে হবেঃ ত্বক ভালো রাখার জন্য মাঝেমধ্যে ফলমূল খেতে হবে। আপেল, কমলা, আঙ্গুর এগুলো না খেতে পারলেও আমাদের দেশীয় ফল গুলো খেতে হবে। আমরা জানি দেশীয় ফলগুলোতে অন্যান্য ফলের তুলনায় প্রচুর ভিটামিন বেশি থাকে।

সুতির এবং নরম কাপড় পরুনঃ রুক্ষ কাপড় ত্বকের ক্ষতি করতে পারে, তাই নরম ও আরামদায়ক সুতির কাপড় পরুন।

শীতের সঠিক পোশাক বাছাই করুনঃ শীতের সময় ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য আমরা অনেকেই উলের কাপড় ব্যবহার করি কিন্তু ওলের কাপড় ত্বকে র‍্যাশ সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য উলের কাপড়ের নিচে কটনের পোশাক পরুন। এছাড়া বেশি টাইট পোশাক এই সময় পড়া যাবে না কারণ আপনি যদি শীতের সময় বেশি টাইট বসাক পড়েন তাহলে আপনার ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে যাবে।

মানসিক চাপ কমিয়ে রাখুনঃ আপনি লক্ষ্য করবেন আপনি যখন পছন্দ মানসিক চাপে থাকবেন তখন আপনার মুখের ত্বক এবং শরীরের ত্বক নষ্ট হয়ে যাবে। তাই চেষ্টা করবেন সব ধরনের মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখার।

ত্বকের ধরণ অনুযায়ী ক্রিম বা লোশন বেছে নিনঃ ময়েশ্চারাইজার ছাড়াও ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী আপনার বাছাইকৃত ক্রিম এবং লোশন ব্যবহার করুন।

এক্সফোলিয়েশন বা স্ক্রাব ব্যবহার করুনঃ শরীরের মৃত কোষগুলো ত্বক খারাপ করে দেয় এজন্য সপ্তাহে একবার মৃত কোষ দূর করার জন্য সামান্য স্ক্রাব ব্যবহার করুন। এতে মৃত কোষ দূর হয়ে যাবে এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী পণ্য ব্যবহার করুনঃ আমরা জানি আমাদের প্রত্যেকের ত্বকের ধরন একই রকম থাকে না আর এজন্যই বিভিন্ন ত্বকের জন্য বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করতে হবে। এজন্য আপনাকে সর্বপ্রথম চিহ্নিত করতে হবে আপনার ত্বক কোন ধরনের। এরপর ত্বকের ধরনের উপর ভিত্তি করে যত্ন নিতে হবে। তাহলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাবেন।

হিউমিডি ফায়ারঃ শেখার সময় আপনার ঘরের আবহাওয়া অবশ্যই হিউমিডিফায়ার এর মাধ্যমে ৪০ থেকে ৬০ পার্সেন্ট এর মধ্যে জলীয় বাষ্প রাখতে হবে।

ঠোঁটের যত্ন নিনঃ শীতের সময় ঠোঁট ফাটার পরিমাণ বেড়ে যায় তাই এই সময় অনেকেই ঠোঁটে আজেবাজে জিনিস ব্যবহার করেন। আপনারা শীতের সময় ঠোটে লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে উপকৃত হবেন।

গোড়ালির যত্ন নিনঃ ঠোঁট ফাটার পাশাপাশি এই সময় অনেকেরই ঘোড়ালি ফেটে যেতে লক্ষ্য করা যায়। তাই পায়ের যত্ন নিতে গোড়ালিতে লিপজেল পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবেঃ ঘুম সবার শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি লক্ষ্য করবেন যেদিন আপনার ঘুম হবে না সেদিন আপনার ত্বক ভালো দেখাবে না। তাই প্রতিদিন চেষ্টা করুন কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা নিশ্চিন্ত ভাবে ঘুমাতে।

শরীরে রোদ প্রয়োগঃ শীতের সময় রোধ বের হলে অবশ্যই কিছু সময় রোদে থাকতে হবে। কারণ আমরা সকলেই জানি সূর্যের রোদে ভিটামিন ডি রয়েছে আর এই ভিটামিন ডি আমাদের শরীরে মসৃণতা ভাব বৃদ্ধি করে।

শীতে ত্বকের যত্নে ক্রিম

শীতে ত্বকের যত্নে ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে এবং নরম রাখতে ক্রিম ব্যবহার করা খুবই জরুরি। কিন্তু কোন ক্রিমটি আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত আপনাদের সর্বপ্রথম তা বুঝতে হবে।

কেন শীতের সময় ক্রিম ব্যবহার করা জরুরি?

দেখুন শীতের তীব্র শুষ্ক আবহাওয়া আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা কেড়ে নেয়। ফলে আমাদের ত্বক ফেটে যায়, এছাড়া ত্বক রুক্ষ এবং বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। ক্রিম ত্বকে আর্দ্রতা জোগায় এবং ত্বককে নরম রাখে।শুষ্ক ত্বকের কারণে শরীরে চুলকানির সমস্যা তৈরি করে, আপনার এই সমস্যা দূর করতে সহায়তা করবে একটু ভালো ক্রিম। 


এছাড়া শীতের সময় ত্বককে বাহ্যিক ক্ষতিকারক উপাদান থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে ক্রিম। একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং ত্বককে মসৃণ করে। একটি ভালো ক্রিম ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে। ঠিক এজন্যই আমাদের শীতের সময় ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।

শীতের জন্য ক্রিম বাছাই করার স্পেশাল ও গুরুত্বপূর্ণ টিপস জেনে নিনঃ

  • পরিবেশ বাছাই করনঃ যদি আপনি শুষ্ক জলবায়ুতে থাকেন, তাহলে অতিরিক্ত ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
  • ত্বকের ধরন বাছাই করনঃ তৈলাক্ত, শুষ্ক, মিশ্র বা সেনসিটিভ এই চার ধরনের হতে পারে তাই আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্রিম বাছাই করুন।
  • সানস্ক্রিন বাছাই করনঃ যদি দিনের বেলা বাইরে যান, তাহলে সানস্ক্রিনযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • ময়েশ্চারাইজিং উপাদান বাছাই করনঃ শিয়া বাটার, অ্যালোভেরা, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড এই উপাদানগুলো ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

শীতে ত্বকের যত্নে ক্রিম সমূহঃ

শীতে ত্বকের যত্নে ক্রিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কিছু কার্যকরী ক্রিমের নাম দেওয়া হলো যা শীতকালে ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবেঃ
  • নিভিয়া ক্রিমঃ এটি একটি জনপ্রিয় ময়েশ্চারাইজার যা ত্বককে গভীরভাবে আর্দ্র করে এবং শুষ্কতা দূর করে।
  • ভ্যাসলিন ইন্টেনসিভ কেয়ার ডিপ ময়েশ্চারাইজিং ক্রিমঃ এই ক্রিমটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বককে নরম ও মসৃণ করে।
  • হিমালয়া হার্বালস ন্যুরিশিং স্কিন ক্রিমঃ প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ এই ক্রিমটি ত্বককে পুষ্টি জোগায় এবং শুষ্কতা দূর করে।
  • পন্ডস কোল্ড ক্রিমঃ এটি শীতকালে ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে।
  • ল্যাকমে পিচ মিল্ক ময়েশ্চারাইজারঃ হালকা ও নন-গ্রিসি এই ময়েশ্চারাইজারটি ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে।
  • সেরাবামঃ সেরাবাম ত্বকে আর্দ্রতা জোগায় এবং ত্বকের বাধাগ্রস্ত কোষ গুলোর শক্তি বাড়ায়।
  • শিয়া বাটারঃ শিয়া বাটার ত্বককে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজ করে এবং আপনার ত্বককে সুরক্ষিত রাখে।
  • কোকো বাটারঃ কোকো বাটার ত্বককে নরম করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
  • অ্যালোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায় এবং ত্বককে শীতল করতে সহায়তা করে।

শীতে ত্বকের জন্য কোন ক্রিম ভালো?

শীতকালে ত্বকের জন্য সঠিক ক্রিম নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময়ে ত্বক শুষ্ক এবং রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই এখন আমি নীচে এমন কিছু কার্যকর শীতকালীন ক্রিম সম্পর্কে আলোচনা করব যা আপনাকে আপনার ত্বকের বিভিন্ন ধরণ অনুযায়ী ক্রিম নির্বাচন করতে সহায়তা করবে। তাহলে চলুন জেনে নেই তাদের ধরন অনুযায়ী কিছু বাছাইকৃত ভালো ভালো শীতের ক্রিম সম্পর্কে।

১) ড্রাই ত্বকের জন্যঃ যাদের ত্বক খুব শুষ্ক, তারা বেশি ময়েশ্চারাইজারযুক্ত ক্রিম বেছে নিন।
যেমনঃ
Nivea Soft Cream
Cetaphil Moisturizing Cream
Pond’s Cold Cream
Vaseline Intensive Care Cocoa Butter

২) তেলতেলে ত্বকের জন্যঃ তেলতেলে ত্বকের জন্য অয়েল-ফ্রি বা জেল-বেসড ময়েশ্চারাইজার ভালো কাজ করে।
যেমনঃ
Neutrogena Hydro Boost Water Gel
Clinique Moisture Surge
Plum Green Tea Mattifying Moisturizer

৩) সংবেদনশীল ত্বকের জন্যঃ যাদের ত্বক সংবেদনশীল, তাদের জন্য অ্যালকোহল এবং সুগন্ধি-মুক্ত ক্রিম বেছে নেওয়া উচিত।
যেমনঃ
Aveeno Skin Relief Moisturizing Cream
La Roche-Posay Toleriane Ultra
Simple Kind to Skin Hydrating Light Moisturizer

৪) মিশ্র ত্বকের জন্যঃ মিশ্র ত্বকের জন্য হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
যেমনঃ
Lotus Herbals Whiteglow Gel Cream
L’Oreal Paris Hydrafresh Aqua Cream
Bioderma Sebium Hydra

৫) প্রাকৃতিক ক্রিম (হোমমেড বা অর্গানিক পণ্য)ঃ যদি আপনি প্রাকৃতিক কিছু ব্যবহার করতে চান, তবে শিয়া বাটার, অ্যালোভেরা জেল বা নারকেল তেল-ভিত্তিক পণ্য বেছে নিতে পারেন।
যেমনঃ
Kama Ayurveda Eladi Hydrating Ayurvedic Cream
Forest Essentials Soundarya Radiance Cream

শীতে মেয়েদের ত্বকের ক্রিম

শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়া সবার জন্যই জরুরি বিশেষ করে মেয়েদের। শুষ্ক আবহাওয়া ত্বককে রুক্ষ ও ফাটা করে তোলে। শীতে মেয়েদের ত্বকের যত্নে কিছু বিশেষ ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে যা ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করবে এবং নরম ও মসৃণ রাখবে। 

এখানে কিছু কার্যকরী ক্রিমের নাম দেওয়া হলোঃ
  • নিভিয়া সফট ক্রিম
  • পন্ডস কোল্ড ক্রিম
  • হিমালয়া হার্বালস ন্যুরিশিং স্কিন ক্রিম
  • ভ্যাসলিন ইন্টেনসিভ কেয়ার ডিপ ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম
  • ল্যাকমে পিচ মিল্ক ময়েশ্চারাইজার
এখন আমরা জানবো শীতে মেয়েদের শরীরের ত্বকের ধরন অনুযায়ী কিভাবে ক্রিম বাছাই করবেনঃ

শীতকালে মেয়েদের ত্বকের জন্য সঠিক ক্রিম নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শীতের শুষ্কতা ত্বককে রুক্ষ ও নিস্তেজ করে তোলে। মেয়েদের ত্বকের ধরন অনুযায়ী কিছু উপযুক্ত ক্রিমের তালিকা দেওয়া হলো যা ত্বককে নরম, মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করবেঃ

১) শীতকালে মেয়েদের ড্রাই ত্বকের জন্য (শুষ্ক ত্বক)ঃ শুষ্ক ত্বক গভীর ময়েশ্চারাইজারের প্রয়োজন হয়।
যেমনঃ
Nivea Creme
Cetaphil Moisturizing Cream
The Body Shop Vitamin E Intense Moisture Cream
Vaseline Intensive Care Cocoa Glow

২) শীতকালে মেয়েদের নরমাল ত্বকের জন্য (স্বাভাবিক ত্বক)ঃ নরমাল বা স্বাভাবিক ত্বকের জন্য হালকা এবং কার্যকর ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন।
যেমনঃ
Pond’s Cold Cream
Dove Nourishing Body Cream
Olay Moisturizing Cream

৩) শীতকালে মেয়েদের তেলতেলে ত্বকের জন্য (অয়েলি স্কিন)ঃ তেলতেলে ত্বকের জন্য অয়েল-ফ্রি বা জেল-বেসড ক্রিম ব্যবহার করুন।
যেমনঃ
Neutrogena Hydro Boost Gel Cream
L'Oreal Paris Hydra Fresh Gel Cream
Plum Green Tea Mattifying Moisturizer

৪) শীতকালে মেয়েদের সংবেদনশীল ত্বকের জন্য (Sensitive Skin)ঃ সংবেদনশীল ত্বকের জন্য অ্যালকোহল ও পারফিউম মুক্ত ক্রিম ব্যবহার করুন।
যেমনঃ
Simple Hydrating Light Moisturizer
Aveeno Ultra-Calming Nourishing Night Cream
La Roche-Posay Toleriane Ultra Moisturizer

৫) শীতকালে মেয়েদের মিশ্র ত্বকের জন্য (Combination Skin)ঃ মিশ্র ত্বকের জন্য হালকা জল-ভিত্তিক যে ক্রিম গুলো রয়েছে সেগুলো অনেক কার্যকর।
যেমনঃ
Lotus Herbals White Glow Gel Cream
Clinique Moisture Surge 72-Hour Hydrator
Bioderma Sebium Hydra Moisturizer

৬) শীতকালে মেয়েদের সব ধরনের ত্বকের জন্য অর্গানিক এবং প্রাকৃতিক পণ্যঃ যারা প্রাকৃতিক বা রাসায়নিক-মুক্ত পণ্য পছন্দ করেন তারা নিচের এই পণ্যগুলো থেকে, পণ্যগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আশা করি উপকৃত হবেন।
যেমনঃ
Kama Ayurveda Eladi Hydrating Ayurvedic Cream
Forest Essentials Sandalwood & Saffron Cream
Mamaearth Ubtan Nourishing Cold Cream

শীতে ছেলেদের ত্বকের ক্রিম

শীতে ছেলেদের ত্বকের ক্রিম সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন কারণ ছেলেদের ত্বক অনেক সেনসিটিভ হয়ে থাকে। এই সময় ত্বকের যত্ন নেওয়া সবার জন্যই জরুরি, বিশেষ করে পুরুষদের জন্য। তাছাড়া ছেলেরা কাজের জন্য সারাদিন বাইরে থাকে এজন্য তাদের একটি সঠিক ক্রিম শীতের জন্য বাছাই করা জরুরী। শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে, তাই ছেলেদের জন্য এমন ক্রিম বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, শুষ্কতা কমায় এবং ফাটার সমস্যা থেকে রক্ষা করে।

শীতের সময় ছেলেরা কেন ক্রিম ব্যবহার করবেন?

শীতের সময় ছেলেরা ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বকের চিটচিটে ভাব দূর হয়। তাছাড়া সময় ত্বকে যে আদ্রতার ঘাটতি হয় সেই ঘাটতি ছেলেদের পূরণ করে ক্রিম। ছেলেরা যেহেতু মেয়েদের চেয়ে বাইরে বেশি থাকে তাই সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষার জন্য শীতের সময়েও ছেলেদের ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। তাছাড়া একটি ভালো ক্রিম ব্যবহার করলে শীতের সময় ছেলেদের চুলকানির সমস্যা দূর হয় অর্থাৎ ত্বকের এলার্জি থেকে মুক্ত থাকা যায়।

ছেলেদের শীতের সময় ক্রিম কেনার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে?

  • সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার ত্বকের ধরন নির্বাচন করতে হবে কারণ সবার ত্বকের ধরন এক থাকে না। ভিন্ন ভিন্ন ত্বকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ক্রিম ব্যবহার করতে হয়।
  • আপনার ত্বকে যদি ব্রণ জনিত বা একজিমা জনিত সমস্যা থাকে তাহলে আপনাকে সতর্কতার সহিত একটি ভালো ব্র্যান্ডের ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
  • ক্রিম এর মধ্যে যে সকল উপাদান গুলো রয়েছে সে সকল উপাদান গুলো ভালো মানের হতে হবে।
এখন চলুন আমরা জেনে নেই ছেলেদের শীতের জন্য ত্বকের ধরন অনুযায়ী কোন ক্রিম গুলো ব্যবহার করা যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।

ছেলেদের শীতের জন্য ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্রিম

  • বায়োকুয়া অয়েল কন্ট্রোল ফেস ক্রিম ফর ম্যানঃ এই ক্রিমটি তেলতেলে ত্বকের জন্য উপযুক্ত। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে এবং ত্বককে মসৃণ রাখে।
  • Nivea মেন ডার্ক স্পট রিডাকশন ক্রিমঃ মুখের দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।
  • গার্নিয়ার ব্রাইট কমপ্লিট ভিটামিন সি ইয়োগার্ট নাইট ক্রিমঃ ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে।
  • Simple স্কিন লাইট ময়েশ্চারাইজার ক্রিমঃ সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযুক্ত এবং ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।
  • Himalaya স্কিন কেয়ার ময়েশ্চারাইজিং ডে ক্রিমঃ ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং শুষ্কতা দূর করে।
  • Glow & Handsome ইনস্ট্যান্ট ব্রাইটনেস ক্রিমঃ ত্বককে উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করে তোলে।

ছেলেদের ত্বকের জন্য শীতের আরো কিছু ক্রিম এবং সেই ক্রিমগুলোর গুনাগুন বা বৈশিষ্ট্য টেবিলে প্রকাশ করা হলোঃ

Nivea Men Creme
হালকা এবং অয়েল-মুক্ত ফর্মুলা
মুখ, হাত ও শরীরের জন্য ব্যবহারযোগ্য
ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে

Vaseline Intensive Care Men Body & Face Lotion
শুষ্ক ত্বকের জন্য বিশেষভাবে তৈরি
গভীর ময়েশ্চারাইজিং প্রদান করে
ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখে

Garnier Men PowerWhite Fairness Moisturiser
শুষ্ক ত্বকের যত্নের পাশাপাশি ত্বককে উজ্জ্বল করে
SPF সমৃদ্ধ, যা সূর্যের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে

The Body Shop Vitamin E Moisture Cream
ত্বকের গভীরে পুষ্টি যোগায়
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রভাবের কারণে ত্বক তরতাজা রাখে

Pond's Men Energy Bright Moisturiser
শুষ্ক ত্বকের পাশাপাশি ত্বককে সতেজ করে
মুখের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে

এখন চলুন আমরা জেনে নিই ছেলেদের ত্বকের ধরন অনুযায়ী শীতের বিভিন্ন ক্রিমগুলো সম্পর্কেঃ

১) শুষ্ক ত্বক (Dry Skin)ঃ শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতার অভাব থাকে এবং তা শীতে আরও শুষ্ক হয়ে যায়।
ছেলেদের শুষ্ক ত্বকের ক্রিম সমূহ
Nivea Soft Moisturising Cream: ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে
Vaseline Deep Moisture Cream: গভীর ময়েশ্চার প্রদান করে
The Body Shop Vitamin E Intense Moisture Cream: প্রিমিয়াম পুষ্টি ও ময়েশ্চারাইজিং

টিপসঃ
  • ক্রিম ব্যবহারের আগে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • ময়েশ্চারাইজার দিনে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।
২) তৈলাক্ত ত্বক (Oily Skin)ঃ তৈলাক্ত ত্বক শীতেও তৈলাক্ত থাকতে পারে, তবে আর্দ্রতা কমে যাওয়ার ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।
ছেলেদের তৈলাক্ত ত্বকের ক্রিম সমূহ
Neutrogena Hydro Boost Water Gel: হালকা ও নন-গ্রিসি
Cetaphil Oil-Free Moisturiser: তৈলাক্ত ত্বকের জন্য প্রিমিয়াম সমাধান
Plum Green Tea Mattifying Moisturiser: তৈল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ময়েশ্চার প্রদান করে

টিপসঃ
  • অয়েল-ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • অতিরিক্ত তেল হওয়ার সমস্যা থাকলে টোনার ব্যবহার করুন।
৩) মিশ্র ত্বক (Combination Skin)ঃ মুখের কিছু অংশ শুষ্ক ও কিছু অংশ তৈলাক্ত থাকলে তাকে মিশ্র থাক বলে।
ছেলেদের মিশ্র ত্বকের ক্রিম সমূহ
L'Oreal Paris Hydra Fresh Aqua Balm: গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজিং করে
Clinique Moisture Surge 72-Hour Auto-Replenishing Hydrator: শুষ্ক অংশকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং তৈলাক্ত অংশ ভারসাম্য বজায় রাখে
Garnier Men OilClear Moisturiser: মিশ্র ত্বকের জন্য উপযোগী

টিপসঃ
  • যেসব অংশ শুষ্ক সেখানে বেশি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • তৈলাক্ত অংশে কম পরিমাণে ক্রিম লাগান।
৪) সংবেদনশীল ত্বক (Sensitive Skin)ঃ এ ধরনের ত্বকে কিছু ব্যবহার করলে খুব দ্রুত চুলকাতে শুরু করে বা লাল হয়ে যায়, তাই প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ ক্রিম প্রয়োজন এই ধরনের ত্বকের জন্য।
ছেলেদের সংবেদনশীল ত্বকের ক্রিম সমূহ
Cetaphil Gentle Moisturising Lotion: সংবেদনশীল ত্বকের জন্য বেশ কার্যকর
Aveeno Skin Relief Moisturising Lotion: প্রাকৃতিক ও অ্যালার্জি-মুক্ত একটি ক্রীম
Bioderma Sensibio Light Cream: এটাও অ্যালার্জি প্রতিরোধক একটি ক্রীম

টিপসঃ
  • কেমিক্যাল-মুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন।
৫) স্বাভাবিক ত্বক (Normal Skin)ঃ স্বাভাবিক ত্বক খুব বেশি শুষ্ক বা তৈলাক্ত হয় না। তবে শীতে এই ধরনের ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজিং প্রয়োজন।
ছেলেদের স্বাভাবিক ত্বকের ক্রিম সমূহ
Nivea Men Creme: সারা শরীরের জন্য খুব কার্যকর
Himalaya Nourishing Skin Cream: প্রাকৃতিক এবং খুব হালকা একটি ক্রীম
Pond's Moisturising Cold Cream: ছেলেদের শীতের জন্য আদর্শ একটি ক্রী

টিপসঃ
  • দিনে ১-২ বার ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
অতিরিক্ত টিপস যা আপনাদের জানা উচিতঃ
  • ক্রিম ব্যবহারের আগে ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
  • রাতে ঘুমানোর আগে গভীর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

শীতে ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল

শীতে ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ শীতে ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকর উপাদান। এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে, আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েল ত্বকের যত্নে একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অলিভ অয়েল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে ত্বকের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী।

নিচে শীতে ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েলের কিছু ব্যবহার এবং পরামর্শ দেওয়া হলোঃ

অলিভ অয়েলের উপকারিতা

  • ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করেঃ অলিভ অয়েলে ভিটামিন E এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের শুষ্কতা দূর করেঃ শীতকালে শুষ্ক এবং ফাটা ত্বক মসৃণ করে।
  • ত্বক মেরামত করেঃ শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক পুনরুদ্ধার করে।
  • প্রাকৃতিক গ্লো এনে দেয়ঃ ত্বকে উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
  • প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ ত্বককে ফ্রি-র‍্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
  • আর্দ্রতা ধরে রাখেঃ অলিভ অয়েল ত্বকে একটি প্রাকৃতিক বাধা তৈরি করে যা আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে ফাটার সম্ভাবনা কমে যায়।
  • ত্বককে নরম করেঃ অলিভ অয়েলের ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য ত্বককে নরম ও কোমল করে।
  • অ্যান্টি-এজিংঃ অলিভ অয়েলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুক্ত র‌্যাডিকেলের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে, ফলে ত্বকের বয়স বাড়ার লক্ষণ কমে।
  • সেনসিটিভ ত্বকের জন্য উপযোগীঃ অলিভ অয়েল সাধারণত সেনসিটিভ ত্বকে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না।
  • হিলিং প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেঃ ছোটখাটো ক্ষত বা ফাটল নিরাময়ে অলিভ অয়েল সাহায্য করে।

শীতে অলিভ অয়েল ব্যবহারের উপায়

১) ময়েশ্চারাইজার হিসেবে সরাসরি ব্যবহারঃ
  • হালকা গরম অলিভ অয়েল ত্বকে লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন।
  • এটি মুখ, হাত, পা বা শরীরের যেকোনো শুষ্ক অংশে ব্যবহার করা যায়।
  • রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
২) স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহারঃ
  • ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে ১ চা চামচ চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন।
  • এটি দিয়ে হালকা করে ত্বক ঘষে নিন।
  • ত্বকের মরা কোষ দূর হবে এবং ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হবে।
৩) ঠোঁটের যত্নে বা লিপ বাম হিসেবে ব্যবহারঃ
  • শীতকালে ঠোঁট ফাটা সমস্যা সমাধানে অলিভ অয়েল সরাসরি ঠোঁটে লাগান।
  • এটি ঠোঁট নরম ও মসৃণ রাখবে।
  • মনে রাখবেন ফাটা ঠোঁটের জন্য অলিভ অয়েল একটি দারুণ ময়েশ্চারাইজার।
৪) ফেস মাস্কে মিশিয়ে ব্যবহারঃ
  • ১ চা চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু এবং কিছুটা দই মিশিয়ে ফেস মাস্ক তৈরি করুন।
  • ১৫-২০ মিনিট মুখে রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
৫) গোসলের সময় ব্যবহারঃ
  • গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন।
  • এতে গোসল করার সময় ত্বক শুষ্ক হবে না এবং ত্বক মসৃণ থাকবে।
৬) মেকআপ রিমুভার হিসেবেঃ
  • অলিভ অয়েল দিয়ে মেকআপ সহজেই পরিষ্কার করা যায়।
৭) নখের যত্নেঃ
  • নখ ও নখের চারপাশের ত্বককে নরম রাখতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন।
৮) হেয়ার মাস্কঃ
  • ত্বক ছাড়াও আপনি চুলকে ময়েশ্চারাইজ করতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এতে চুল ভালো থাকে।

অলিভ অয়েল ব্যবহারের সতর্কতা সমূহঃ

  • বিশুদ্ধ অলিভ অয়েল ব্যবহার করুনঃ Extra Virgin Olive Oil ত্বকের জন্য সবচেয়ে ভালো।
  • অ্যালার্জি পরীক্ষা করুনঃ প্রথমবার ব্যবহার করলে ছোট একটি জায়গায় প্যাচ টেস্ট করুন।
  • অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন নাঃ অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যেতে পারে।
  • প্যাচ টেস্টঃ নতুন কোনো উপাদান ব্যবহার করার আগে ছোট একটা জায়গায় প্যাচ টেস্ট করে নিন। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন সেই অলিভ অয়েলটি আপনার জন্য পারফেক্ট কিনা।

অলিভ অয়েল কেনার সময় যে সমস্ত বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিতঃ

  • Extra Virgin Olive Oil বাছাই করুন করুন কারণ এটি প্রাকৃতিক এবং কেমিক্যাল-মুক্ত।
  • আপনি যে অলিভ অয়েলটি কিনতে চাচ্ছেন সে আলিভ অয়েলের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত।
  • বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের পণ্য কিনুন।

শীত কালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য অলিভ অয়েল ব্যবহারের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপসঃ

  • মুখের ত্বকেঃ রাতে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার ত্বকে অলিভ অয়েল মালিশ করুন। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং শুষ্কতা দূর করে।
  • গোসলের পরঃ গোসলের পর ভেজা ত্বকে অলিভ অয়েল মালিশ করুন। এটি ত্বক সহজে শুষে নেয় এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রদান করে।
  • ময়েশ্চারাইজার হিসেবেঃ আপনার নিয়মিত ময়েশ্চারাইজারের সাথে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
  • শুষ্ক ত্বকের জন্যঃ শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর করতে সরাসরি অলিভ অয়েল ত্বকে মালিশ করুন। এটি ত্বককে নরম ও মসৃণ করে তোলে।
অলিভ অয়েল ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ, তাই এটি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। সুতরাং বলা যায় শীতকালে অলিভ অয়েল ব্যবহার করে আপনি স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর ত্বক পেতে পারেন। অলিভ অয়েল নিয়মিত ব্যবহারে শীতকালের শুষ্ক ত্বকের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় গুলো আপনাকে জানতে হবে কারণ শীতের সময় ত্বকের যত্নের জন্য ঘরোয়া উপায় আপনি যে উপাদান গুলো ব্যবহার করবেন সেগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক হবে। অর্থাৎ কোন কেমিক্যাল মিশ দেওয়া থাকবে না। তাই চেষ্টা করুন শীতের সময় ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য।
শীতে-ত্বকের-যত্নে-ঘরোয়া-উপায়

নিচে শীতের ত্বকের যত্নে কিছু সহজ এবং প্রাকৃতিক ঘরোয়া পদ্ধতি দেওয়া হলোঃ

১) মধুর ব্যবহারঃ মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। মুখে মধু লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন, তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

উপকারিতাঃ 
  • মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার এবং ত্বককে নরম ও মসৃণ করে।
ব্যবহারঃ
  • সরাসরি মধু ত্বকে লাগান।
  • ১৫-২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • এটি প্রতিদিন একবার করে করলে আপনি শীতের সময় ত্বকের জন্য অনেক উপকারিতা পাবেন।
২) দুধের ব্যবহারঃ দুধের ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বককে নরম ও মসৃণ করে। তুলায় দুধে ভিজিয়ে মুখে লাগান এবং ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

উপকারিতাঃ 
  • দুধের ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং উজ্জ্বলতা আনে।
ব্যবহারঃ
  • তুলায় দুধ লাগিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করুন।
  • ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
  • আরও ভালো ফলের জন্য দুধে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।
৩) নারকেল তেলঃ নারকেল তেল ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমানোর আগে মুখে ও শরীরে নারকেল তেল মালিশ করুন।
  • উপকারিতাঃ নারকেল তেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বককে মসৃণ করে।
ব্যবহারঃ
  • রাতে ঘুমানোর আগে শরীরে এবং মুখে নারকেল তেল ম্যাসাজ করুন।
  • সকালে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪) অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহারঃ অ্যালোভেরা জেল ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বককে শীতল ও মসৃণ রাখে। তাজা অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

উপকারিতাঃ 
  • অ্যালোভেরা জেল ত্বককে ঠাণ্ডা রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে।
ব্যবহারঃ
  • তাজা অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করে ত্বকে লাগান।
  • ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৫) ওটমিল স্ক্রাবঃ ওটমিল ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে। ওটমিল গুঁড়ো করে পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং মুখে লাগান।

উপকারিতাঃ 
  • ওটমিল ত্বকের মরা কোষ দূর করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখে।
ব্যবহারঃ
  • ২ টেবিল চামচ ওটমিল, ১ টেবিল চামচ মধু এবং একটু দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
  • এটি মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে হালকা করে ঘষে ধুয়ে ফেলুন।
৬) কলার প্যাক তৈরি ও ব্যবহারঃ

উপকারিতাঃ
  • কলা ত্বককে পুষ্টি যোগায় এবং শুষ্কতা দূর করে।
ব্যবহারঃ
  • একটি পাকা কলা চটকে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
  • ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৭) ঘি (ননী)ঃ

উপকারিতাঃ
  • ঘি ঠোঁট ফাটা এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে চমৎকার।
ব্যবহারঃ
  • ফাটা ঠোঁটে বা শুষ্ক ত্বকে সরাসরি ঘি লাগান।
  • রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
৮) শসার রস প্রয়োগঃ

উপকারিতাঃ
  • শসা ত্বকে ঠাণ্ডা অনুভূতি দেয় এবং শুষ্কতা দূর করে।
ব্যবহারঃ
  • শসা কেটে রস বের করে তুলার সাহায্যে ত্বকে লাগান।
  • ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৯) পেঁপে এবং মধু প্যাক তৈরিঃ

উপকারিতাঃ
  • পেঁপে ত্বককে নরম ও উজ্জ্বল করে এবং মধু ময়েশ্চারাইজ করে।
ব্যবহারঃ
  • একটি পাকা পেঁপে চটকে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
  • মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
১০) গোলাপ জল (Rose Water)ঃ

উপকারিতাঃ
  • গোলাপ জল ত্বককে সতেজ রাখে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখে।
ব্যবহারঃ
  • গোলাপ জল স্প্রে হিসেবে ব্যবহার করুন বা তুলা দিয়ে ত্বকে লাগান।
  • এটি প্রতিদিন সকালে ও রাতে ব্যবহার করতে পারেন।

১১) অলিভ অয়েলঃ অলিভ অয়েল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। গোসলের পর ভেজা ত্বকে অলিভ অয়েল লাগান।

১২) আখের রসঃ আখের রস ত্বককে ঠান্ডা রাখে এবং ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাব থাকলে তা কমাতে সহায়তা করে।

১৩) বেসন ও দইঃ বেসন ও দই মিশিয়ে ত্বকে লাগালে মৃত কোষ দূর হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

১৪) মধু ও দুধের সংমিশ্রণঃ মধু ও দুধ মিশিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং নরম হয়ে ওঠে।

এই ঘরোয়া উপায়গুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে শীতে আপনার ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।

শীতকালে শুষ্ক ত্বকের যত্ন

শীতকালে শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেওয়া সবার জরুরী। শীতকালে শুষ্ক ত্বক সাধারণ সমস্যা, যা ঠাণ্ডা আবহাওয়া এবং কম আর্দ্রতার কারণে আরও বাড়ে। শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিতে সঠিক উপায় জানা গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু কার্যকর উপায় দেওয়া হলোঃ

শীতে শুষ্ক ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় | শুষ্ক ত্বকের যত্নে ঘরোয়া টিপস

১) ময়েশ্চারাইজিংঃ গোসলের পর ত্বক কিছুটা ভেজা থাকতেই ময়েশ্চারাইজার লাগান। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্রিম, লোশন বা জেল বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • ময়েশ্চারাইজার লাগানোর জন্য শুষ্ক ত্বককে আগে পরিষ্কার করতে হবে।
উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজারঃ
  • Shea Butter
  • Cocoa Butter
  • Glycerin সমৃদ্ধ ক্রিম
ব্যবহারঃ
  • প্রতিবার গোসলের পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
২) তেল মালিশ করুনঃ
  • শীতকালে ত্বকে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, বাদাম তেল বা জোজোবা তেল ম্যাসাজ করুন।
  • রাতে ঘুমানোর আগে তেল লাগিয়ে সকালে ধুয়ে ফেলুন।
  • এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায়।
৩) অ্যালোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায় এবং ত্বককে শীতল করে।
  • তাজা অ্যালোভেরা জেল ত্বকে লাগান।
  • এটি ত্বক ঠাণ্ডা রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে।
৪) গোসলের সময় উষ্ণ পানি ব্যবহারঃ
  • বেশী গরম পানি এড়িয়ে চলুন কারণ এটি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল দূর করে। কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন।
  • গোসলের পর সঙ্গে সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
৫) মধু ব্যবহার করুনঃ
  • মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
  • সরাসরি মধু ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন।
  • পরে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৬) ওটমিল মাস্ক ব্যবহারঃ
  • ২ টেবিল চামচ ওটমিলের সঙ্গে মধু ও দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
  • এটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
৭) দুধঃ দুধে ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে যা ত্বকের জন্য উপকারী। দুধ দিয়ে ত্বক মাসাজ করলে ত্বক মসৃণ হয়।

জীবনধারায় পরিবর্তন আনুন। যেমনঃ
  • ১) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। কারণ শরীরে পানি কমে গেলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • ২) বাতাসের আর্দ্রতা বজায় রাখুন এবং রুম হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। এটি ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা যোগ করবে।
  • ৩) সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন কারন শীতের রোদও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। SPF 30 বা তার বেশি যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

শীতের সময় শরীরের আরো কিছু বিশেষ যত্নঃ

  • ১) ঠোঁট ফাটা থেকে রক্ষা পেতে লিপ বাম বা নারকেল তেল ব্যবহার করুন। মধু এবং চিনি দিয়ে ঠোঁট স্ক্রাব করতে পারেন।
  • ২) হাতে ও পায়ে ঘি, নারকেল তেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান। মোজা ও গ্লাভস পরিধান করুন শুষ্কতা এড়াতে।
  • ৩) নরম কাপড় পরিধান করুন যেমন সুতির কাপড় ব্যবহার করুন। উল বা সিনথেটিক কাপড় সরাসরি ত্বকের সঙ্গে সংস্পর্শে না আনাই ভালো।
শীতে শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিতে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে রাখুনঃ
  • অতিরিক্ত সাবান বা ক্লিনজার ব্যবহার করবেন না।
  • ত্বক ঘষে পরিষ্কার না করে নরম তোয়ালে দিয়ে মুছুন।
  • কেমিক্যালযুক্ত পণ্য এড়িয়ে চলুন।

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায় আমাদের সকলের জানা উচিত কারণ শীতের সময় ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায়। ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এবং বজায় রাখতে ঘরোয়া উপায় ও সঠিক যত্ন নেওয়া জরুরি। 

নিচে শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কিছু কার্যকর উপায় দেওয়া হলোঃ

১) ত্বককে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজ করুনঃ শীতে ত্বক শুষ্ক হলে তা মলিন দেখায়। ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন যা ত্বককে আর্দ্র রাখবে। প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার: অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা অ্যালোভেরা জেল। দিনে অন্তত ২-৩ বার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

২) মধু এবং লেবুর প্যাকঃ

উপকারিতাঃ
  • মধু ত্বক মসৃণ ও আর্দ্র রাখে, লেবু ত্বক উজ্জ্বল করে।
ব্যবহারঃ
  • ১ টেবিল চামচ মধু এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগান।
  • ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।
৩) দুধ ও হলুদ প্যাকঃ

উপকারিতাঃ
  • দুধ ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে এবং হলুদ প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে।
ব্যবহারঃ
  • ২ টেবিল চামচ দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে মুখে লাগান।
  • ২০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪) ওটমিল এবং দই স্ক্রাবঃ

উপকারিতাঃ 
  • ওটমিল ত্বকের মরা কোষ দূর করে এবং দই ত্বক উজ্জ্বল করে।
ব্যবহারঃ
  • ১ টেবিল চামচ ওটমিলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ দই মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন।
  • মুখে লাগিয়ে ৫ মিনিট হালকা করে ঘষুন এবং ধুয়ে ফেলুন।
৫) শসা এবং গোলাপ জল ব্যবহারঃ

উপকারিতাঃ
  • শসা ত্বক ঠাণ্ডা রাখে এবং গোলাপ জল ত্বকের টোন ঠিক রাখে।
ব্যবহারঃ
  • শসার রস বের করে গোলাপ জল মিশিয়ে তুলার সাহায্যে মুখে লাগান।
  • ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন ব্যবহার করলে দ্রুত ফল পাওয়া যাবে।
৬) পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ
  • শরীর আর্দ্র রাখার জন্য দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • এটি ত্বক ভেতর থেকে আর্দ্র রাখে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
৭) স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবেঃ
  • শীতকালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খান।
খাবার তালিকাঃ শীতকালে ত্বক ফর্সা হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনসমূহ এবং খাবার সমূহ নিম্নরূপ।
  • ভিটামিন C: লেবু, কমলা, আমলকী।
  • ভিটামিন E: বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ।
  • ওমেগা-৩: মাছ, আখরোট।
৮) পর্যাপ্ত ঘুমঃ
  • ঘুমের অভাবে ত্বক নিষ্প্রাণ দেখাতে পারে।
  • প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
৯) ত্বকের সানস্ক্রিন ব্যবহারঃ
  • শীতকালেও সূর্যের UV রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
  • SPF 30+ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
১০) ঘরোয়া ফেস প্যাক তৈরিঃ পেঁপে এবং মধু প্যাক তৈরি করুন।

উপকারিতাঃ 
  • পেঁপে ত্বক উজ্জ্বল করে এবং মধু ময়েশ্চার যোগায়।
ব্যবহারঃ
  • পাকা পেঁপে চটকে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগান।
  • ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ঘরোয়া ফেস প্যাক তৈরিঃ বাদাম ও দুধ প্যাক
  • ৪-৫টি বাদাম ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
  • এটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ঘরোয়া ফেস প্যাক তৈরিঃ মধু ও দইয়ের প্যাক 
মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং দইয়ের ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের মৃত কোষ দূর করে। মধু ও দই মিশিয়ে মুখে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন, তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

ঘরোয়া ফেস প্যাক তৈরিঃ কলা ও অলিভ অয়েল মাস্ক 
কলা ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা যোগায় এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

ঘরোয়া ফেস প্যাক তৈরিঃ শসা ও অ্যালোভেরা জেল প্যাক 
শসার রস ও অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মুখে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে গভীরভাবে সজীব রাখে এবং আর্দ্রতা যোগায়।

ঘরোয়া ফেস প্যাক তৈরিঃ চন্দন ও গোলাপজল মিশ্রণ 
চন্দন গুঁড়া ও গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন, তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের টোন ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

ঘরোয়া ফেস প্যাক তৈরিঃ বাদাম ও দুধের স্ক্রাব 
বাদামের গুঁড়া ও দুধ মিশিয়ে মুখে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। ১০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

১১) নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করুনঃ
  • ত্বকের মরা কোষ দূর করতে সপ্তাহে ১-২ বার এক্সফোলিয়েট করুন।
  • প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে চিনি ও নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।
১২) মুখ ধোয়ার পরে ফেস মিস্ট ব্যবহার করুনঃ গোলাপ জল বা হালকা ফেস মিস্ট ত্বক সতেজ রাখে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

এই উপায়গুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে শীতে আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকবে। শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য যতগুলো উপায় রয়েছে সবগুলো আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম। এখন আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব কিভাবে শীতের সময় মুখের ত্বকের যত্ন নিতে হয়।

শীতকালে মুখের যত্ন | শীতে মুখের ত্বকের যত্ন

মুখের ত্বক এবং শরীরের ত্বক কখনো এক হয়না। মুখের ত্বকের চামড়া শরীরের অনান্য জায়গার চামড়ার তুলনায় অনেক পাতলা হয়। তাই আলাদা আলাদা ভাবে শীতে মুখের ত্বকের যত্ন এবং শরীরের ত্বকের যত্ন নিতে হবে। শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা এবং রুক্ষতা বেড়ে যায়। সঠিক যত্ন নিলে ত্বক সজীব ও সুন্দর রাখা যায়। 

নিচে শীতকালে মুখের যত্নের কিছু কার্যকরী পরামর্শ দেওয়া হলোঃ

১) ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুনঃ শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, তাই ত্বকের ধরন অনুযায়ী একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার লাগান।

২) মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করুনঃ শীতকালে হার্শ বা স্ট্রিপিং ক্লিনজার ব্যবহার না করে মৃদু এবং হাইড্রেটিং ক্লিনজার ব্যবহার করুন যা ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক।

৩) ঠোঁটের যত্ন নিনঃ ঠোঁট শীতে ফেটে যায়, তাই ভালো মানের লিপ বাম ব্যবহার করুন। যেটিতে শিয়া বাটার, ভিটামিন ই, বা প্রাকৃতিক তেল রয়েছে।

৪) পানি পান করুনঃ শীতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। শরীরের ভেতর থেকে হাইড্রেট থাকলে ত্বক উজ্জ্বল ও সজীব দেখায়।

৫) সানস্ক্রিন ব্যবহার করুনঃ শীতকালেও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা প্রয়োজন। অন্তত SPF ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

৬) প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করুনঃ শীতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা বাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বক নরম রাখে।

৭) এক্সফোলিয়েশন করুনঃ ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে ১-২ বার মৃদু এক্সফোলিয়েশন করুন। এটি ত্বকের রুক্ষতা কমাতে সাহায্য করে।

৮) সুষম খাবার গ্রহণ করুনঃ শীতে ত্বকের যত্নের জন্য ভিটামিন এ, সি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খান।

৯) গরম পানিতে মুখ ধোয়া এড়িয়ে চলুনঃ অত্যন্ত গরম পানি ত্বক শুষ্ক করে দেয়। তাই কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুতে পারেন।

১০) রাতে সঠিক স্কিনকেয়ার রুটিন অনুসরণ করুনঃ রাতে ময়েশ্চারাইজার বা নাইট ক্রিম ব্যবহার করে ঘুমান। এতে ত্বকের আর্দ্রতা পুরো রাত ধরে থাকবে।

১১) সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকুনঃ শীতকালেও রোদ কম থাকলেও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করুন।

১২) ঘরের মধ্যে আর্দ্রতা বজায় রাখুনঃ ঘরের ভিতর আদ্রতা বজায় রাখার জন্য একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন বা একটি পাত্রে পানি রাখুন।

১৩) হিমায়িত মুখোশ ব্যবহার করুনঃ সাধারণত হিমায়িত মুখোশের প্রধান কাজ হচ্ছে মুখের ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করা। আর আমরা জানি যেখানে রক্ত সঞ্চালন বেশি থাকে সেখানে ত্বক ভালো থাকে।

১৪) ত্বকের ধরন অনুযায়ী পণ্য ব্যবহার করুনঃ সব ধরনের ত্বকের জন্য একই পণ্য ভালো হয় না। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী পণ্য কিনুন।

১৫) অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরা সকল ধরনের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তাই অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে রাখুন। দুধে ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে যা সকল ধরনের ত্বকের জন্য উপকারী। একটু গরম দুধে কটন ডুবিয়ে মুখে মাসাজ করুন। এছাড়া মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ থাকে, এই উপাদান দুইটি সকল ধরনের ত্বক ভালো রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই মধু মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।

শীতকালে ত্বকের নিয়মিত যত্ন নিলে ত্বক সতেজ এবং উজ্জ্বল থাকবে।

শীতে মুখের ক্রিম

শীতে মুখের ক্রিম ভালো মানের কিনতে হবে। বাজারে অনেক ধরনের ক্রিম রয়েছে কিন্তু সে সমস্ত ক্রিমগুলো আপনার ত্বকের জন্য পারফেক্ট কিনা তা আগে বুঝতে হবে। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য আমি এখানে আলোচনা করব, আপনাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের অনুযায়ী, শীতের বিভিন্ন ক্রিম গুলো সম্পর্কে। 

প্রথমে আমরা কিছু ক্রিম সম্পর্কে জেনে নিই যে ক্রিমগুলো ছেলে এবং মেয়ে উভয় ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর আমরা স্পেসিফিক ভাবে ছেলেদের আলাদা এবং মেয়েদের আলাদা করে কিছু ক্রিমের নাম আপনাদের বলে দেব।

চলুন জেনে নেই মুখের কিছু কার্যকর মুখের ক্রিমের নাম যে ক্রিমগুলো ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই ব্যবহার করতে পারবেনঃ
  • Augustinus Bader The Rich Creamঃ এই ক্রিমটি ত্বককে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজ করে এবং সুরক্ষা দেয়। এতে স্কুয়ালেন, অ্যাভোকাডো, এবং ইভনিং প্রিমরোজ তেল রয়েছে।
  • Biossance Squalane + Probiotic Gel Moisturizerঃ এই ময়েশ্চারাইজারটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং প্রোবায়োটিকের মাধ্যমে ত্বকের ময়েশ্চার ব্যারিয়ার উন্নত করে।
  • Charlotte Tilbury Magic Creamঃ এই ক্রিমটি হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, রোজ-হিপ তেল, এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ, যা ত্বককে হাইড্রেটেড এবং উজ্জ্বল রাখে।
  • Neutrogena Hydro Boost Water Gelঃ এই ক্রিমটি হালকা এবং ত্বকে শীতল অনুভূতি দেয়। এটি হায়ালুরোনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা ত্বককে আর্দ্র রাখে।
এখন চলুন জেনে নেই ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের ত্বকের জন্য কিছু ক্রিম যে ক্রিমগুলো ত্বকের ধরন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবেঃ

শীতকালে ত্বকের জন্য একটি ভালো ক্রিম নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। নিচে শীতকালে ব্যবহারের জন্য কিছু কার্যকরী মুখের ক্রিম এবং তাদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো।

১) ময়েশ্চারাইজিং ক্রিমঃ

উপাদানঃ শিয়া বাটার, কোকো বাটার, হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন।
যাদের জন্যঃ যাদের ত্বক খুব শুষ্ক বা সংবেদনশীল।
উপকারিতাঃ ত্বক নরম রাখে এবং ফাটা বা রুক্ষ ত্বক মেরামত করে।

উদাহরণ:
Cetaphil Moisturizing Cream
NIVEA Soft Moisturizing Cream
The Body Shop Vitamin E Cream

২) হাইড্রেটিং জেল ক্রিমঃ
উপাদানঃ অ্যালোভেরা, হায়ালুরনিক অ্যাসিড, সেরামাইড।
যাদের জন্যঃ যাদের ত্বক তৈলাক্ত বা মিশ্র ধরনের।
উপকারিতাঃ ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে কিন্তু ত্বক তৈলাক্ত করে না।

উদাহরণ:
Neutrogena Hydro Boost Water Gel
Clinique Moisture Surge

৩) এন্টি-এজিং নাইট ক্রিমঃ

উপাদানঃ রেটিনল, ভিটামিন সি এবং পেপটাইড।
যাদের জন্যঃ পরিণত ত্বক বা যারা ত্বকে মসৃণতা এবং দৃঢ়তা চান।
উপকারিতাঃ রাতে ত্বক মেরামত করে এবং শীতের শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে।

উদাহরণ:
Olay Regenerist Night Cream
L’Oréal Paris Revitalift

৪) প্রাকৃতিক ক্রিমঃ

উপাদানঃ নারকেল তেল, বাদাম তেল, মধু।
যাদের জন্যঃ যারা প্রাকৃতিক সমাধান পছন্দ করেন।
উপকারিতাঃ কোনো রাসায়নিক নেই এবং প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে।

উদাহরণ:
Khadi Natural Herbal Cream
Himalaya Nourishing Skin Cream

৫) মেডিকেটেড ক্রিম (যাদের ত্বক খুব সংবেদনশীল)
উপাদানঃ প্যানথেনল, এলানটইন।
যাদের জন্যঃ যাদের ত্বকে চুলকানি বা একজিমার সমস্যা হয়।
উপকারিতাঃ ত্বকের সমস্যা কমিয়ে আনে এবং ময়েশ্চারাইজ করে।

উদাহরণ:
CeraVe Moisturizing Cream
Aveeno Skin Relief Moisturizing Cream

শীতের সময় মুখের জন্য এই ক্রিমগুলো কিভাবে নির্বাচন করবেন?

  • ত্বকের ধরন বুঝুন যেমন শুষ্ক, তৈলাক্ত, মিশ্র বা সংবেদনশীল।
  • উপাদান পরীক্ষা করুন যেমন অ্যালার্জি হতে পারে এমন উপাদান এড়িয়ে চলুন।
  • পিএইচ ব্যালেন্সড প্রোডাক্ট বেছে নিন যাতে ত্বকের প্রাকৃতিক ব্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
শীতের সময় মুখের জন্য এই ক্রিমগুলো প্রতিদিন ব্যবহারের নিয়মঃ
  • মুখ ধুয়ে হালকা ভেজা অবস্থায় ক্রিম লাগান।
  • সকালে সানস্ক্রিনের সঙ্গে এবং রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করুন।
  • শীতের ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে উপযুক্ত ক্রিম ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শীতকালে মেয়েদের মুখের ক্রিম

শীতকালে মেয়েদের মুখের ক্রিম এবং ছেলেদের মুখের ক্রিম আলাদা আলাদা হয়। শুধুমাত্র কিছু প্রোডাক্ট ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই ব্যবহার করতে পারে যা আমি উপরে আলোচনা করেছি। কিন্তু এখন আমি আলোচনা করব শুধুমাত্র মেয়েদের মুখের ক্রিম নিয়ে যা আপনারা মেয়েরা শীতকালে ব্যবহার করতে পারবেন। শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তাই মুখের জন্য এমন ক্রিম বেছে নেওয়া প্রয়োজন যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখবে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করবে।

এখানে কিছু জনপ্রিয় ক্রিমের নাম দেওয়া হলো যা শীতকালে মেয়েদের ত্বকের যত্নে কার্যকরী হতে পারেঃ
  • লিকোরিস কোল্ড ক্রিম (Licorice Cold Cream) - এটি ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে ময়েশ্চারাইজ করে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
  • ওলেই ম্যাক্স নাইট হাইড্রেটিং মশ্চারাইজার এন্ড ক্রিম (Olay Max Night Hydrating Moisturizer & Cream) - শীতকালে ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
  • কোকো বাটার কোল্ড ক্রিম (Cocoa Butter Cold Cream) - শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
  • গার্নিয়ার স্কিন একটিভ ওয়াটার রোজ ময়েশ্চারাইজার (Garnier Skin Active Water Rose Moisturizer)** - ত্বককে তরতাজা ও ময়েশ্চারাইজ রাখে।
  • পন্ডস ড্রাই স্কিন ক্রিম (Pond's Dry Skin Cream) - শুষ্ক ত্বকের জন্য আদর্শ।
এখানে আরো কয়েকটি কয়েকটি জনপ্রিয় এবং কার্যকর শীতকালীন মুখের ক্রিমের নাম দেওয়া হলো, যা মেয়েদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ত্বক অনুযায়ী বিশেষ উপযোগীঃ

১) নিউট্রোজিনা হাইড্রো বুস্ট জেল ক্রিমঃ
প্রধান বৈশিষ্ট্যঃ ত্বককে দীর্ঘস্থায়ী ময়েশ্চারাইজড রাখে।
ত্বকের ধরনঃ শুষ্ক থেকে স্বাভাবিক ত্বকের জন্য উপযুক্ত।

২) ন্যাচার রিপাবলিক অ্যালো ভেরা জেলঃ
প্রধান বৈশিষ্ট্যঃ অ্যালো ভেরার প্রাকৃতিক নির্যাস ত্বককে শান্ত করে এবং আর্দ্রতা যোগায়।
ত্বকের ধরনঃ সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী।

৩) নিভিয়া সফট ক্রিমঃ
প্রধান বৈশিষ্ট্যঃ হালকা কিন্তু গভীরভাবে ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখে।
ত্বকের ধরনঃ সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযুক্ত।

৪) গার্নিয়ার লাইট কমপ্লিট ভিটামিন সি ক্রিমঃ
প্রধান বৈশিষ্ট্যঃ ত্বক উজ্জ্বল করে এবং শুষ্কতা দূর করে।
ত্বকের ধরনঃ মিশ্র এবং স্বাভাবিক ত্বকের জন্য ভালো।

৫. হিমালয়া হার্বালস নারিশিং স্কিন কেয়ার ক্রিম
প্রধান বৈশিষ্ট্য: প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি যা ত্বককে পুষ্টি জোগায়।
ত্বকের ধরন: শুষ্ক এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযুক্ত।

শীতকালে মেয়েদের মুখের এই ক্রিমগুলো ব্যবহারের নিয়মঃ
  • শীতকালে মুখ পরিষ্কার করার পর প্রতিদিন সকালে এবং রাতে ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • ক্রিম লাগানোর আগে ত্বক হালকাভাবে মুছে নিন যেন ময়েশ্চারাইজার ভালোভাবে শোষিত হয়।
  • ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্রিম নির্বাচন করুন।

শীতকালে ছেলেদের মুখের ক্রিম

শীতকালে মেয়েদের ফ্রেশের জন্য ক্রিম গুলো সম্পর্কে আমরা জানলাম তাই এখন আমরা জানবো শীতকালে ছেলেদের মুখের ক্রিম কোনগুলো সে সম্পর্কে। শীতকালে ছেলেদের ত্বকও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাই এমন ক্রিম ব্যবহার করা জরুরি যা ত্বককে আর্দ্র রাখবে এবং শুষ্কতা থেকে সুরক্ষা দেবে। ছেলেদের ত্বক সাধারণত নারীদের তুলনায় কিছুটা তেলতেলে এবং পুরু হয়, তাই তাদের জন্য বিশেষ উপযোগী ক্রিম বেছে নেওয়া দরকার।

যেমনঃ
  • বায়োকুয়া অয়েল কন্ট্রোল ফেস ক্রিম (Bioaqua Oil Control Face Cream) - ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • নিভিয়া মেন ডার্ক স্পট রিডাকশন ক্রিম (Nivea Men Dark Spot Reduction Cream) - মুখের দাগ দূর করতে কার্যকরী।
  • গার্নিয়ার ব্রাইট কমপ্লিট ভিটামিন সি ইয়োগার্ট নাইট ক্রিম (Garnier Bright Complete Vitamin C Yogurt Night Cream) - ত্বককে উজ্জ্বল ও ময়েশ্চারাইজ রাখে।
  • হিমালয়া স্কিন কেয়ার ময়েশ্চারাইজিং ডে ক্রিম (Himalaya Skin Care Moisturizing Day Cream) - ত্বককে ময়েশ্চারাইজ ও সুরক্ষিত রাখে।
  • গ্লো এন্ড হ্যান্ডসাম ইনস্ট্যান্ট ব্রাইটনেস ক্রিম (Glow & Handsome Instant Brightness Cream)** - ত্বককে উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করে তোলে।
এখন আমরা আরো কিছু ছেলেদের শীতের ক্রিম সম্পর্কে জানব যে ক্রিমগুলো আপনাকে আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী আপনাকে ব্যবহার করতে সহায়তা করবে।

১. নিভিয়া মেন ক্রিম
প্রধান বৈশিষ্ট্য: শুষ্ক ত্বককে নরম ও আর্দ্র রাখে এবং দ্রুত শোষিত হয়।
ত্বকের ধরন: সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযুক্ত।

২. গার্নিয়ার মেন পাওয়ার হোয়াইট ফেয়ারনেস ময়েশ্চারাইজার
প্রধান বৈশিষ্ট্য: ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং শুষ্কতা দূর করে।
ত্বকের ধরন: তেলতেলে থেকে মিশ্র ত্বকের জন্য ভালো।

৩. পন্ডস মেন এনার্জি ব্রাইট ফেস ক্রিম
প্রধান বৈশিষ্ট্য: ত্বককে সতেজ রাখে এবং আর্দ্রতা যোগায়।
ত্বকের ধরন: স্বাভাবিক থেকে তেলতেলে ত্বকের জন্য উপযোগী।

৪. হিমালয়া মেন ইন্টেনস ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম
প্রধান বৈশিষ্ট্য: প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি যা শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ও পুষ্টি জোগায়।
ত্বকের ধরন: শুষ্ক এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ভালো।

৫. লোরিয়াল প্যারিস মেন এক্সপার্ট হাইড্রা পাওয়ার
প্রধান বৈশিষ্ট্য: ত্বককে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজড রাখে এবং শুষ্কতা রোধ করে।
ত্বকের ধরন: সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযুক্ত।

ছেলেদের বিভিন্ন ধরনের ত্বকের জন্য এই ক্রিমগুলো ব্যবহারের পরামর্শ জেনে নিনঃ
  • মুখ পরিষ্কার করার পর ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • সকালে এবং রাতে নিয়মিত ক্রিম লাগান।
  • শীতকালে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বাতাস থেকে রক্ষা পেতে ক্রিমের সাথে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

বাচ্চাদের শীতের ক্রিম

শীতকালে বাচ্চাদের ত্বক খুবই সংবেদনশীল থাকে এবং সহজেই শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। তাই এমন ক্রিম বেছে নেওয়া উচিত, যা বাচ্চাদের কোমল ত্বককে সুরক্ষা দেবে, আর্দ্রতা যোগাবে এবং রাসায়নিকমুক্ত হবে। 

এখানে কিছু জনপ্রিয় শীতকালীন ক্রিমের নাম দেওয়া হলো যা বাচ্চাদের শীতকালে ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়েছেঃ

  • জনসনস বেবি লোশন (Johnson’s Baby Lotion) - বাচ্চাদের ত্বককে ময়েশ্চারাইজ ও নরম রাখে।
  • অ্যাভিনো বেবি ডেইলি ময়েশ্চারাইজিং লোশন (Aveeno Baby Daily Moisturizing Lotion) - প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি যা ত্বককে সুরক্ষিত রাখে।
  • সেবামেড বেবি লোশন (Sebamed Baby Lotion) - সংবেদনশীল ত্বকের জন্য আদর্শ।
  • কোডোমো বেবি লোশন (Kodomo Baby Lotion) - ত্বককে ময়েশ্চারাইজ ও সুরক্ষিত রাখে।
  • সেটাফিল বেবি ডেইলি লোশন (Cetaphil Baby Daily Lotion) - ত্বককে ময়েশ্চারাইজ ও নরম রাখে।

এছাড়া আরো কিছু ভালো ভালো ক্রিমের নাম দেওয়া হল যা বাচ্চাদের শীতকালে আপনারা নিশ্চিন্তায় দিতে পারবেন কারণ এগুলোতে কোন সাইড ইফেক্ট নেই।

১. জনসনস বেবি ক্রিম (Johnson's Baby Cream)
বৈশিষ্ট্য: কোমল এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য আদর্শ। ত্বকে দ্রুত শোষিত হয় এবং দীর্ঘ সময় আর্দ্র রাখে।
উপযুক্ত: নবজাতক থেকে বড় বাচ্চাদের জন্য।

২. হিমালয়া বেবি ক্রিম (Himalaya Baby Cream)
বৈশিষ্ট্য: প্রাকৃতিক উপাদান যেমন অলিভ অয়েল ও অ্যালমন্ড অয়েল দিয়ে তৈরি। এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং নরম রাখে।
উপযুক্ত: সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ভালো।

৩. সেবামেড বেবি ক্রিম (Sebamed Baby Cream Extra Soft)
বৈশিষ্ট্য: অতি কোমল ত্বকের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং র‌্যাশ বা অ্যালার্জির ঝুঁকি কমায়।
উপযুক্ত: খুব শুষ্ক বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য।

৪. মা আর্থ ময়েশ্চারাইজিং বেবি ক্রিম (Mamaearth Baby Cream)
বৈশিষ্ট্য: প্রাকৃতিক উপাদান যেমন শিয়া বাটার, কোকো বাটার ও জোজোবা অয়েল দিয়ে তৈরি। ক্ষতিকারক রাসায়নিকমুক্ত।
উপযুক্ত: সব ধরনের ত্বকের জন্য।

৫. ডাভ বেবি ক্রিম (Baby Dove Rich Moisture Cream)
বৈশিষ্ট্য: গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজড করে এবং ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে।
উপযুক্ত: শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য আদর্শ।

শীতকালে বাচ্চাদের এই ক্রিমগুলো ব্যবহারের টিপস নিম্নে নিচে দেওয়া হলঃ
  • ক্রিম লাগানোর আগে বাচ্চার ত্বক পরিষ্কার ও শুকনো করুন।
  • দিনে অন্তত দুইবার ক্রিম লাগান, বিশেষ করে গোসলের পর।
  • রাসায়নিকমুক্ত এবং ডার্মাটোলজিস্ট-পরীক্ষিত ক্রিম বেছে নিন।
  • যদি বাচ্চার ত্বকে কোনো অ্যালার্জি বা সমস্যা দেখা দেয়, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আপনার বাচ্চার ত্বক শীতের শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করতে এই সকল ভালো ভালো ক্রিম গুলো আপনাকে ব্যবহার করতে হবে।

শীতে ঠোঁটের যত্ন নেওয়ার উপায়

শীতে ঠোঁটের যত্ন নেওয়ার উপায় আমাদের জানা উচিত কারণ সেটার সময় ত্বকের যত্ন নেয়া যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ ঠোঁটের যত্ন নেওয়া। তাই আমি এখন আলোচনা করব কিভাবে আপনি শীতের সময় ঠোঁটের সম্পূর্ণভাবে যত্ন নিতে পারবেন।

১. লিপ বাম ব্যবহার করুন
একটি ভালো মানের লিপ বাম বা লিপ বাটার ব্যবহার করুন।
উপাদান খেয়াল রাখুন: শিয়া বাটার, কোকো বাটার, মধু, ভিটামিন ই, এবং মোমের মতো উপাদান সমৃদ্ধ লিপ বাম ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে।

২. প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করুন
নারকেল তেল, বাদাম তেল, বা অলিভ অয়েল ঠোঁটের জন্য প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
ঘুমানোর আগে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন।

৩. মধু ও গ্লিসারিন
মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক এবং গ্লিসারিন ঠোঁট নরম রাখতে সাহায্য করে।
রাতে মধু ও গ্লিসারিন মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান।

৪. ঠোঁটের স্ক্রাবিং করুন
মরা চামড়া দূর করতে সপ্তাহে ২ বার ঠোঁট স্ক্রাব করুন।
ঘরোয়া স্ক্রাব: চিনি এবং মধু মিশিয়ে হালকাভাবে ঠোঁট ঘষুন।

৫. পানি পান করুন
শীতকালে কম পানি পান করলে শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে ঠোঁট শুষ্ক হতে পারে।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।

৬. ঠোঁট চাটবেন না
ঠোঁট চাটলে তা আরও শুষ্ক হয়ে যায় এবং ফাটার সম্ভাবনা বাড়ে।

৭. গরম পানির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন
গরম পানি ঠোঁটের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়, তাই গরম পানিতে ঠোঁট ভেজাবেন না।

৮. সানস্ক্রিন লিপ বাম ব্যবহার করুন
শীতের সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও ঠোঁটকে রক্ষা করতে লিপ বামে SPF থাকা জরুরি।

৯. মধু ও চিনি দিয়ে স্ক্রাব করুন
মধু ও চিনি মিশিয়ে ঠোঁটে হালকা করে স্ক্রাব করুন। এটি মৃত কোষ দূর করে ঠোঁটকে নরম ও মসৃণ রাখে।

১০. শুধু গ্লিসারিন ব্যবহার
রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে গ্লিসারিন লাগান। এটি ঠোঁটকে ময়েশ্চারাইজ ও নরম রাখে।

কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যে পদ্ধতি গুলোর মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে আপনার ঠোঁটের জন্য নিতে পারবেন। 

যেমনঃ
  • অ্যালোভেরা জেলঃ ঠোঁটে লাগিয়ে রাখলে তা শীতলতা এবং আর্দ্রতা যোগায়।
  • দুধের সরঃ ঠোঁটে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
  • গোলাপের পাতা ও দুধঃ গোলাপের পাতা পিষে দুধের সাথে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান।

শীতের সময় ত্বকের সমস্যা হলে কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত?

শীতের সময় কিছু মানুষের ত্বকে এমন কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয় যা কোন ক্রিম বা ঘরোয়া উপায়ে ভালো করা যায় না। সেক্ষেত্রে আপনাদের অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
  • যদি ত্বকের সমস্যা খুব বেশি হয় এবং ঘরোয়া উপায়ে না কমে।
  • যদি ত্বক লাল হয়ে যায় এবং ফুলে ওঠে।
  • যদি ত্বকে চুলকানি হয় এবং দাগ পড়ে।
তাহলে অতি দ্রুত কোন সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবন করুন এবং ক্রিম ব্যবহার করুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যদি ত্বকে অতিরিক্ত শুষ্কতা, ফাটা বা অ্যালার্জির সমস্যা থাকে, তবে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

FAQ: শীতের দিনে ত্বকের যত্ন | শীতের ত্বকের যত্ন

শীতকালে মুখে কি ব্যবহার করা যায়?

শীতকালে মুখে হাইড্রেটিং ক্লিনজার, ময়েশ্চারাইজার (শিয়া বাটার বা হায়ালুরনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ), SPF-সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন এবং রাতে অ্যালোভেরা জেল বা প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করুন। ত্বক ফাটা রোধে পানি পান ও হিউমিডিফায়ারও সহায়ক।

শীতকালে মুখে কি মাখা উচিত?

শীতকালে মুখে ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন এবং অ্যালোভেরা জেল বা প্রাকৃতিক তেল (যেমন নারকেল তেল) মাখা উচিত। ত্বক শুষ্কতা রোধে এগুলো কার্যকর।

শীতকালে ফেস সিরাম ব্যবহার করা যাবে কি?

হ্যাঁ, শীতকালে ফেস সিরাম ব্যবহার করা যাবে। হায়ালুরনিক অ্যাসিড বা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সিরাম ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়ক।

শীতকালে মুখে কি ক্রিম মাখা উচিত?

শীতকালে মুখে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম যেমন শিয়া বাটার, হায়ালুরনিক অ্যাসিড বা গ্লিসারিন উপাদান সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। এটি ত্বককে আর্দ্র ও নরম রাখে।

শীতকালে মুখের চামড়া উঠে কেন?

শেষ মন্তব্য

শীতের দিনে ত্বকের যত্ন নেয়ার উপায় এভাবেই আপনি আমার এই আর্টিকেল থেকে শিখে নিতে পারেন। দেখুন আমি এই আর্টিকেলে আপনাদের এমন এমন প্রোডাক্ট সম্পর্কে বলেছি যে প্রোডাক্টগুলো ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট এবং শীতে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী। এছাড়া কোন প্রোডাক্ট ছাড়াই শীতের সময় ঘরে বসে আপনারা কিভাবে আপনাদের ত্বকের এবং মুখের যত্ন নিবেন সে বিষয়েও আলোচনা করেছি। তাই এই আর্টিকেলটি একটু বড় হলেও আপনারা যদি এই আর্টিকেলের সবগুলো তথ্য মেনে শীতের সময় ত্বকের যত্ন নেন তাহলে অবশ্যই আপনার উপকার হবে ইনশাল্লাহ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url